রাজশাহীর পদ্মায় দেখা মিলছে কালা ঘাড় ডুবরি পাখি

রাজশাহীর পদ্মায় দেখা মিলছে কালা ঘাড় ডুবরি পাখি

রাজশাহীর পদ্মায় দেখা মিলছে কালা ঘাড় ডুবরি পাখি
রাজশাহীর পদ্মায় দেখা মিলছে কালা ঘাড় ডুবরি পাখি

অনলাইন ডেস্ক : রাজশাহীর পদ্মা নদীতে দেখা মিলছে কালা ঘাড় ডুবুরি নামের এক প্রজাতির পাখি। (Black-necked Grebe) এরা খাবার সংগ্রহের জন্য একাধিক কৌশল ব্যবহার করে। এই প্রজাতিটি আফ্রিকা, ইউরেশিয়া এবং আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে। তবে কালা ঘাড় ডুবরিরা মিঠা পানিতে বিচরণ করে। পাখিটি মূলত পরিযায়ী শ্রেণির। কালা ঘাড় ডুবুরিকে রাজশাহীর পদ্মায় প্রথম দেখা মিলে ২ বছর আগে। এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে পুনরায় দেখা মিলে।

এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর শীতে পদ্মায় খাবারের সন্ধানে ছুটে আসে কালা ঘাড় ডুবরি। তবে সংখ্যায় খুবই কম। ফলে এটির দেখা পাওয়ায় দুঃস্কর হয়ে পড়ে। এই পাখিটির দৈর্ঘ্য ২৮-৩৪ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ৫৮ সেন্টিমিটার। গড় ওজন ৩৬০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে অভিন্ন। কপাল, মাথার তালু ও ঘাড় কুচকুচে কালো। মাথা খাড়া। কান পশম সোনালি-হলুদ, যা চোখের পেছন দিক থেকে শুরু করে ঘাড়ের ওপর গিয়ে ঠেকেছে।

তবে এই দুর্লভ পাখিটির ছবি তুলতে নেমে পড়েন সৌখিন পাখির ছবি সংগ্রহকারী অনিক মাহমুদ ইমন। শেষে নানা প্রচেষ্টায় গত ২ মার্চ তিনি ক্যামেরাবন্দি করেন কালা ঘাড় ডুবরির ছবি। একটি দল ইঞ্জিন চালিত ছোট নৌকা নিয়ে পদ্মায় ঘুরে ঘুরে এই পাখিটির দেখা পান তিনি।

অনিক মাহমুদ ইমন জানান, কয়েক ঘন্টা ঘুরার পরে পাখিটির দেখা পান তিনি। কিন্তু যখন দেখতে পান, তখনোই ডুব দিয়ে মাছ শিকারের জন্য পানির নিচে হারিয়ে যাচ্ছিল পাখিটি। শেষে কয়েকটি ক্লিকে ধরা পড়ে পাখিটির ছবি।

তিনি আরও জানান, এই কালা ঘাড় ডুবুরি হলো জল পাখির গ্রীব পরিবারের সদস্য। এর মাথা, ঘাড়সহ উপরের বাকী অংশগুলি কালো বর্ণের, শরীরের বাকি অংশ সাদা রঙের। কিশোর পাখির গায়ে বাদামি বর্ণ থাকে। একবার ডুব দিয়ে ৫-৭ মিনিট পানির নিচে থাকতে পারে পাখিটি।

জানা গেছে, বিরল দর্শন পরিযায়ী পাখিটি কেবল প্রচ- শীতে সিলেটের হাওরাঞ্চলে অল্পবিস্তর দেখা মেলে। স্বাদুলে বিচরণ করে। বিচরণ করে জোড়ায় জোড়ায়। সাঁতারে খুব পটু। ঘন ঘন ডুব সাঁতার দিয়ে জলাশয় মাতিয়ে রাখে। জনমানবের সাড়া পেলে মুহূর্তে চুপসে যায়। নিরাপদবোধ মনে না হলে জলাশয়ের ত্রিসীমানায় ঘেঁষে না। খুব হুঁশিয়ারি পাখি, ভীতুও সাংঘাতিক।

এতই হুঁশিয়ারি যে, ডিমে তা দেয়া থেকে উঠে যাওয়ার সময় ডিমের ওপর আগাছা দিয়ে ঢেকে রাখে। ফিরে এসে আগাছা সরিয়ে পুনরায় ডিমে তা দেয়। শত্রুর চোখ ফাঁকি দিতে ডুব সাঁতার দিয়ে বাসায় পৌঁছে। এরা লেজহীন পাখি। হাঁস আকৃতির হলেও ঠোঁট চেপ্টা নয়, সুচালো। নিজ বাচ্চাদের নিরাপদ রাখতে পিঠে চড়িয়ে জলে ভেসে বেড়ায়।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply